মধুর স্বাস্থ্য উপকারিতা ও গুনাগুন
মধু প্রাকৃতিকভাবেই ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বিভিন্ন
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। তবে মধু খাওয়ার রয়েছে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম। এই
নিয়ম মেনে মধু খেলে মধুর রয়েছে অনেক উপকারিতা।
এই পোস্টে আজকে আমরা দেখব মধুর প্রকারভেদ, মধুর পুষ্টিগুণ, মধু খাওয়ার নিয়ম,
মধুর উপকারিতা, মধুর অপকারিতা, মধু ও কালোজিরা একসাথে খাওয়ার উপকারিতা ও
নিয়ম, মধু ও যৌন জীবন, খাটি মধু ও ভেজাল মধু চেনার উপায়, মধু খাওয়ার সুন্নতি
নিয়ম।
পোস্টের সূচিপত্রঃ (যে অংশটি পড়তে চান, সেখানে ক্লিক করুন)
মধুর বিভিন্ন প্রকারভেদ
মধু প্রকৃতির একটি বিশেষ উপহার মানবজাতি ও বিভিন্ন প্রজাতির জন্য। মৌমাছিরা
বিভিন্ন ফুল থেকে এই মধু সংগ্রহ করে। তাই এর স্বাদ ও গুনাগুন ওই ফুলের প্রজাতির
উপর নির্ভর করে। আজ আমরা এখানে মধুর কিছু জনপ্রিয় প্রকারভেদ সম্পর্কে জানবঃ
- লিচু মধুঃ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে লিচু ফুল থেকে এই মধু সংগ্রহ করা হয়। এই মধুর রং সোনালী এবং এই মধু সুগন্ধযুক্ত। এটি অনিদ্রা দূর করে ও ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।
- কালোজিরা মধুঃ এই মধু মৌমাছিরা কালোজিরার ফুল থেকে সংগ্রহ করে। এটির রং কালচে। এটি বেশ ঘন। এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী
- ইউক্যালিপটাস মধুঃ এটি গাড়ো রঙের ও তুলনামূলকভাবে ঘন মধু। এ মধুর রয়েছে বিশেষ অ্যান্টি সেপটিক গুণ। এই মধুর স্বাদ কিছুটা তিক্ত তবে এই মধু গলা ব্যথা কাশি ও ঠান্ডা তে বেশ উপকার করে।
- করঞ্জার মধুঃ করঞ্জ ফুল থেকে সংগ্রহ করা হালকা হলুদ রঙ্গের মধু এটি। এই মধু অনিদ্রা, ত্বকের রোগ ও হজমের সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
- রেপসিড মধুঃ এই মধু হালকা রঙের ও মৃদু স্বাদের। এই মধু শরীরকে শক্তিশালী করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
- তুঁদিমধুঃ তুঁদি ফুল থেকে সংগ্রহ করা গারো রঙের মধু এটি। শ্বাসকষ্ট ও আর্থ্রাইটিসের উপশমে এই মধু সহায়তা করে।
- নেপালী চিনা মধুঃ এই মধু অত্যন্ত ঘন ও গাড়ো। এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মধু।
- কাজু বাদামের মধুঃ এই মধু কাজু বাদামের সাদ ও সুগন্ধি গ্রহণ করে। এই মধু মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
- আয়ুর্বেদিক মধুঃ বিভিন্ন ঔষুধী লতাপাতার সাথে মধু মিশিয়ে যে মধু তৈরি করা হয় তা আয়ুর্বেদিক মধু।
মধুর পুষ্টিগুণ
মধুর পুষ্টিগুণ বলে শেষ করার মত নয়। হাজার হাজার বছর ধরে মধু মানুষের উপকার করে
আসছে। প্রাচীনকাল থেকেই মধু তার স্বাদ ও পুষ্টিগুণের জন্য বিখ্যাত। আসুন এই মধুর
কিছু পুষ্টি গুণ সম্পর্কে জানিঃ
- Glucose & Fructose: মধুর মধ্যে অবস্থিত এই দুটি উপাদান শরীরকে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে ও মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বাড়ায়।
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্সঃ মধুতে বিদ্যমান এই ভিটামিন টি স্নায়ুতন্ত্র কে সুস্থ রাখে ও শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
- আয়রনঃ রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে ও রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে মধুতে বিদ্যমান এই উপাদানটি বেশ সাহায্য করে।
- ক্যালসিয়ামঃ মধুর ক্যালসিয়াম মানব শরীরের হাড় ও দাঁত কে শক্তিশালী করে।
- ম্যাগনেসিয়ামঃ মধুতে অবস্থিত ম্যাগনেসিয়াম মানব শরীরের হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে ও মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বাড়াতে সহায়তা করে।
এভাবে মধুর উপাদান গুলি প্রতিনিয়ত মানব সমাজকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে,
ক্ষত সারাতে, ঠান্ডা কাশি ও গলা ব্যথা উপশমে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে এবং শারীরিক
শক্তিতে বৃদ্ধিতে সহায়তা করে আসছে।
মধু খাওয়ার নিয়ম
মধুর রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা তবে আমাদেরকে অবশ্যই মধু খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও সময়
জানতে হবে আমরা যদি সঠিক নিয়ম ও সময় মেনে মধু খাই তবে মধু থেকে সর্বোচ্চ
উপকারটি আমরা নিতে পারি।
- সকালে খালি পেটেঃ সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ হয় এবং এটি আমাদের খাদ্য হজমে সাহায্য করে।
- রাতে ঘুমের আগেঃ প্রতি রাতে ঘুমের আগে হালকা কুসুম গরম পানিতে আমরা এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা কাশি গলা ব্যথা ও ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
- ব্যায়ামের আগেঃ আমরা যখনই ব্যায়াম করতে যাই তখনই যদি আমরা মধু খাই তাহলে শরীরে জুতো শক্তি সরবরাহ হবে এবং ব্যায়াম করতে এনার্জি পাব।
- পরিমানঃ সাধারণত দিনে ১ থেকে ২ চামচ মধু খাওয়া যেতে পারে।
- তাপমাত্রাঃ মধুকে অতিরিক্ত কোন গরম কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যাবে না।
- খাঁটি মধুঃ সবসময় চেষ্টা করতে হবে খাঁটি মধু খাওয়ার।
- অন্যান্য খাবারের সাথেঃ অন্যান্য খাবারের সাথে মধুকে মিশিয়ে আমরা মধু খেতে পারি।
ডায়াবেটিস রোগী ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে মধু খেতে হবে
অন্যথায় হিতে বিপরীত হতে পারে।
মধু খাওয়ার উপকারিতা
মধু খাওয়ার রয়েছে অনেক উপকারিতা। তবে কেউ যদি দীর্ঘস্থায়ী কোন রোগে ভুগে থাকেন
বা ডায়াবেটিস আক্রান্ত থাকেন বা নিয়মিত কোন ওষুধ সেবন করেন, তাহলে তিনি অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মধু সেবন করবেন। মধুর যে সব উপকারিতা রয়েছে তা
নিম্নে আলোচনা করা হলো।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- ক্ষত সারাতে সহায়তা করে
- ঠান্ডা কাশি ও গলা ব্যথা উপশম করে
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
- শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে
- যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে
- হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
তাই মধুকে আপনি আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রেখে দিয়ে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন
করতে পারেন।
মধুর অপকারিতা
মধু খাওয়ার তেমন কোন অপকারিতা পাওয়া যায় নাই। তবে এর পরিমাণ এবং খাওয়ার উপায়
এর তারতম্যের কারণে কিছু অপকারিতা দেখা দেয়। সে সব অপকারিতা নিম্নে আলোচিত
হলোঃ
- ডায়াবেটিসঃ মধুতে অধিক পরিমাণে শর্করা থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে
- ওজন বৃদ্ধিঃ অতিরিক্ত মধু খেলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে
- শিশুদের জন্যঃ এক বছরের কম কোন শিশুকে মধু খাওয়ানো উচিত নয় এতে শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে
- এলার্জির সমস্যাঃ যাদের মধুর প্রতি এলার্জি রয়েছে তাদের জন্য মধু বেশ ক্ষতি করে থাকে
- উচ্চ তাপমাত্রাঃ উচ্চ তাপমাত্রার পানীয় সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়া যাবেনা এতে শরীরে টক্সিন তৈরি হতে পারে
তাই মধু একটি উচ্চ গুন সম্পন্ন খাবার হওয়ার পরেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অপকারিতা
রয়েছে বিধায় সতর্কতার সঙ্গে মধু খেতে হবে।
মধু ও কালোজিরা একসাথে খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম
মধু ও কালোজিরা একসাথে খাওয়ার রয়েছে বিশেষ উপকারিতা। এক গ্লাস গরম পানিতে এক
চামচ মধু ও কালোজিরার গুঁড়ো মিশিয়ে অথবা চা ও কফিতে কালোজিরা গুঁড়া মিশিয়ে
খাওয়া যেতে পারে। মধু ও কালোজিরা একসাথে খেলে যেসব উপকার পাওয়া যায় তা নিম্নে
আলোচিত হলোঃ
- হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলেঃ মধু ও কালোজিরা দুটোই হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেশ উপকারী।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ মধু ও কালোজিরা শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে যার কারণে মুক্ত রেডিকেল ধ্বংস করতে পারে আর এর কারণেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
- শ্বাসকষ্ট দূর করেঃ মধু ও কালোজিরা বিভিন্ন রকম সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে তাই কারো শ্বাসনালী সংক্রমণ থাকলে মধু ও কালোজিরা মিশ্রণ তা দূর করতে সাহায্য করে।
- রক্ত পরিশুদ্ধ করেঃ কালোজিরা রক্ত পরিশুদ্ধ করতে পারে এবং মধু শক্তি সরবরাহ করতে পারে।
- ত্বকের সমস্যা দূর করতেঃ কালোজিরা ও মধু একত্রে মিশ্রণ করে ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ ব্রণ বা অন্যান্য ত্বকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
তাই আপনি চেষ্টা করবেন মধু ও কালোজিরা একসাথে মিশিয়ে খাবার। তবে মনে রাখবেন,
আপনার যদি মধুর প্রতি বা কালোজিরার প্রতি এলার্জি থাকে বা আপনি যদি গর্ভবতী
হয়ে থাকেন বা আপনি বিশেষ কোনো ধরনের ওষুধ খাচ্ছেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ গ্রহণ করে কালোজিরা ও মধু খাবেন।
মধু ও যৌন জীবন
পৃথিবীর সকল পুরুষই একটি সুস্থ ও শক্তিশালী যৌন জীবন আকাঙ্ক্ষা করে। মধু এই সুস্থ
ও শক্তিশালী যৌনজীবনে যথেষ্ট সাহায্য করতে পারে। মধু যেভাবে যৌন জীবনকে উন্নত
করতে পারে তা নিচে আলোচিত হলো-
- শক্তি বৃদ্ধিঃ মধুতে রয়েছে প্রচুর গ্লুকোজ যা শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে এবং যৌন কার্যকলাপের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।
- রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়ঃ মধু যৌনাঙ্গে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- টেস্টোস্টেরন উৎপাদন বৃদ্ধিঃ মধু পুরুষদের টেস্টোস্টেরন উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে যা যৌন ইচ্ছা বাড়িয়ে দেয়।
- প্রাকৃতিক লুব্রিক্যান্টঃ মধু প্রাকৃতিক লুব্রিক্যান্ট হিসেবে কাজ করে থাকে যা যৌন সম্পর্ককে আরো আরামদায়ক করে।
- স্ট্রেস কমায়ঃ মধুর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অন্যান্য উপকারী উপাদানগুলো আমাদের স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। স্ট্রেস মুক্ত জীবন যৌন জীবনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে।
তাই নিয়মিত মধু খাওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের যৌন জীবনকে সুস্থ যৌন জীবন হিসেবে
গ্রহণ করতে পারি
খাটি মধু ও ভেজাল মধু চেনার উপায়
মধুর যে অত্যন্ত উপকারী পুষ্টিগুণ রয়েছে তা শুধুমাত্র খাঁটি মধু খাওয়ার
মাধ্যমেই পেতে পারি। তবে বাজারে মধুর চাহিদা অনেক বেশি হওয়ায় অনেক ভেজাল মধু
পাওয়া যায়। তাই মধু কেনার আগে খাঁটি মধু ও ভেজাল মধু চেনার উপায় জেনে নেয়া
অত্যন্ত জরুরী। খাঁটি মধু চেনার কিছু উপায় আলোচনা করা হলো।
- গন্ধঃ খাঁটি মধুর গন্ধ মিষ্টি ও ফুলে ফুলে ভরা এর মধ্যে কোনরকম অদ্ভুত বা কৃত্রিম গন্ধ পাওয়া যাবে না।
- স্বাদঃ খাঁটি মধুর স্বাদ মিষ্টি ও একটু চটচটে লাগে ভেজাল মধু সাধারণত খুব বৃষ্টি হয় এবং চটচটে লাগেনা।
- রংঃ খাটি মধুর রং হালকা হলুদ থেকে গারো হলুদ হতে পারে তবে এটি ফুলের ধরনের উপর নির্ভর করে তবে ভেজাল মধুর রং সব সময়ই উজ্জ্বল হয়ে থাকে।
- ঘনত্বঃ খাঁটি মধু বেশ ঘন হয় যদি আপনি মধুকে একটি চামচে নেন এবং তা উল্টে দেন তাহলে তা ধীরে ধীরে গড়িয়ে পড়বে।
- জমে যাওয়াঃ খাঁটি মধু শীতকালে বা ফ্রিজে রাখলে জমে যায় সাধারণত ভেজাল মধু জমে না।
- পানিতে মিশ্রণঃ খাঁটি মধু সহজে পানিতে মেশেনা এটি পানিতে ভাসমান থাকে ভেজাল মধু সহজেই পানিতে মিশে যায়।
- কাগজে দাগঃ একটি কাগজে মধু নিতে হবে খাঁটি মধু কাগজে দাগ রেখে যাবে কিন্তু ভেজাল মধু দাগ রাখবেনা বা হালকা দাগ রাখবে।
- মোমবাতি পরীক্ষাঃ একটি বাটিতে মধু নিয়ে সেখানে আগুন ধরিয়ে দিতে হবে। খাঁটি মধু জ্বলে উঠবে এবং কালো ধোঁয়া বের হবে। ভেজাল মধু জ্বলে উঠবে না।
মধু খাওয়ার সুন্নতি নিয়ম
ইসলামে মধুকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বর্ণনা করা হয়েছে। কুরআন ও হাদিসে আমরা মধুর
গুনাগুন ও এর বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারি। নিম্নে মধু খাওয়ার সুন্নতি
নিয়ম আলোচনা করা হলো।
- খালি পেটেঃ হাদীস শরীফে এসেছে যে সকালে খালি পেটে মধু খাওয়া উত্তম এতে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- গরম পানির সাথেঃ হালকা কুসুম গরম পানির সাথে মধুকে মিশিয়ে খাওয়া সুন্নত।
- রাতে ঘুমের আগেঃ রাতে ঘুমের আগে গরম দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে ঘুম ভালো হয় ও শরীর শক্তিশালী হয়।
- তালুতে মধু নিয়েঃ হাদিস থেকে জানা যায় তালুর মধ্যে এক চামচ মধু নিয়ে তা চেটে খেতে হবে তাহলে সর্বোত্তম ফল পাওয়া যাবে।
উপসংহার
উপরের আলোচনা থেকে এটি স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে মধুতে রয়েছে অপার পুষ্টিগুণ ও
ঔষধি গুণ। তবে তার সঙ্গে আমাদেরকে সময় ও নিয়ম মেনে মধু খেতে হবে।
অনিয়ন্ত্রিতভাবে মধু খেলে বরং উপকারের চেয়ে অপকারী বেশি হবে। তবে
নিয়ন্ত্রিতভাবে মধু খেলে আমরা সর্বদাই উপকৃত হব।
প্রশ্ন উত্তর পর্ব
প্রতিদিন এক চামচ মধু খেলে কি হয়?
প্রতিদিন এক চামচ করে মধু খেলে আমরা যেসব উপকার পাবঃ
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে
- শক্তি বৃদ্ধি করবে
- হজম শক্তি বাড়িয়ে তুলবে
- ত্বকের শক্তি বাড়িয়ে তুলবে
- শ্বাসকষ্ট দূর করবে
- ঠান্ডা লাগা থেকে বেঁচে থাকতে পারবো
- হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাবে
- অনিদ্রা দূর করবে
খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা কি কি?
খালি পেটে মধু খেলে আমরা যেসব উপকার পাব
- আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবে
- আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে তুলবে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে
- আমাদের শ্বাসকষ্ট কমে যাবে
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দিবে
- অনিদ্রা দূর করবে
রাতে মধু খাওয়ার সুবিধা কি কি?
- ভালো ঘুম হবে
- হজমে সহায়তা করবে
- শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করবে
- যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে
রাতে মধু খাওয়ার অসুবিধা কি কি?
রাতে মধু খেলে এবং পরিমাণ বেশি হলে তা আমাদের শরীরের ওজন বাড়িয়ে তুলবে
ওজন কমানোর জন্য মধু কিভাবে ব্যবহার করা যায়?
ওজন কমাতে হলে কিছু পদ্ধতি মেনে মধু খেতে হবেঃ
- মধু ও লেবুর রস সকালে কুসুম গরম পানিতে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খেলে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- মধু ও দারুচিনি মধু দারুচিনি মিশ্রণ আমাদের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে
দিনে কতটুকু মধু খাওয়া উচিত?
প্রতিটি মানুষের বয়স, শরীরের ওজন, স্বাস্থ্যের অবস্থা, পরিশ্রম, শারীরিক
কার্যকলাপ- এই সব কিছুর উপর নির্ভর করে ঠিক করতে হবে কতটুকু মধু খাওয়া উচিত। তবে
সাধারণভাবে দিনে এক থেকে দুই চামচ মধু খাওয়া স্বাস্থ্যকর
মধু কি কখনো নষ্ট হয়?
আমরা প্রায়ই এই প্রশ্নের সম্মুখীন হই যে মধু নষ্ট হয় কিনা। সঠিকভাবে সংরক্ষণ
করতে পারলে মধু বহুদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। মধু নষ্ট না হওয়ার কারণগুলো হল
জলের অভাব, উচ্চ পরিমাণে চিনির উপস্থিতি, পিএইচ এর মান বেশকম এবং হাইড্রোজেন পার
অক্সাইড এর উপস্থিতি। তবে মধু নষ্ট হবে না এমনটা নয়। মধুতে পানি মিশালে মধু
তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাবে। খোলাপাত্রে মধু রাখলে মধু নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মধু কখন বিষাক্ত হয়ে যায়?
মধুকে গরম পানির সাথে মেশালে মধুর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায় এছাড়া ভেজাল মধু
এবং যাদের মধুর প্রতি এলার্জি রয়েছে তাদের জন্য মধু উপকারী নয় বরং অপকারী।
মধু সংরক্ষণের উপায় কি কি?
মধুকে বায়ু রোধী পাত্রে রেখে শুষ্ক ও ঠান্ডা জায়গায় এবং সূর্যের আলো থেকে দূরে
রাখলে মধু বহুদিন পর্যন্ত গুণগতমান ঠিক রেখে খাওয়ার উপযোগী থাকবে।
স্বপ্নকথার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url